গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঘুনাথপুর এলাকার স্কুলছাত্রী ফাহিমা আক্তার (১৪)। পরদিন বাড়ির পাশে একটি আম গাছে মেলে তার ঝুলন্ত মরদেহ। প্রথমে স্থানীয়রা এটিকে আত্মহত্যা ধারণা করলেও সুরতহালের পর পুলিশের ধারণা হয়, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের কারণে কিশোরীর মৃত্যু হতে পারে। রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ঘটনার ছয়দিনের মাথায় মাসুম ও শাহজাহান নামে দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা। পরে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বিকৃত যৌনাচারের মাধ্যমে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে একটি ইটভাটার আটজন শ্রমিক। এরপর লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় তারা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হল- মো. শাহজাহান, শহিদ মিয়া, মাছুম বিল্লাহ, আলমগীর হোসেন ও রাসেল মিয়া। শাহজাহান ও শহিদ মিয়ার নামে এর আগেও ফুলবাড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার সবার বাড়ি ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে।
শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা। তিনি জানান, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয় ওই স্কুলছাত্রী। এ সময় একটি সংঘবদ্ধ দলের কবলে পড়ে সে। ওই আটজন মিলে ধর্ষণের পর ফাহিমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে দুজন শুক্রবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, ধর্ষণকারীরা দিনের বেলায় ইটভাটার শ্রমিকের কাজ করলেও রাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নারী পাচারের সঙ্গে যুক্ত। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে রাসেল মিয়া ও আলমগীর হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকি তিনজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।