জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের নামফলক সরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নামফলক স্থাপন করায় উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনকালে প্রকল্প প্রকৌশলীর ওপর হামলা ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে আহত প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জনি বাদী হয়ে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের প্রতিনিধি পৌর কাউন্সিলর সাখাওয়াতুল আলম মুকুলকে প্রধান আসামী করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০ থেকে ৫০ জনের বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। রাতেই পুলিশ মুন্না ও বেলাল নামে দুই জনকে গ্রেফতার করে আজ বুধবার সকালে জামালপুর আদালতে সোপর্দ করেছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারী সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের জন্য সবধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ২০১৯ সালে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের নামফলক ছিলো। কিন্তু উদ্বোধনের আগে সেটি সরিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী নামফলক স্থাপন করা হয়। সংসদ সদস্যের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের নামফলক না থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলাকালে ডা. মুরাদ হাসানের প্রতিনিধি সাখাওয়াতুল আলম মুকুল ও তার লোকজন অতর্কিত হামলা চালিয়ে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োজিত প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জনিসহ প্রকল্পে কর্মরত লোকজনদের বেধড়ক পিটিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে রাস্তা পর্যন্ত নিয়ে যায়। পরে হামলাকারীরা তাদের তিনটি মোবাইল সেট, মসজিদের সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক ও মনিটর খুলে নিয়ে যায়। এ সময় হামলায় প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জনি (৩২), সুপারভাইজার মোঃ রকিব (৩০), ঠিকাদারের কর্মচারী ওসমান গণি বিপুল (২৮) ও সৌরভ (২৫) গুরুতর আহত হয়। তাদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে মোঃ রকিব ও ওসমান গণি বিপুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
এই ঘটনায় আহত প্রকৌশলী জনি মঙ্গলবার রাতে সরিষাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামীরা হলেন- সাখাওয়াতুল আলম মুকুল, সুমন চাকলাদার, সোহেল মিয়া, দুর্জয়, হারুন, বাবু, মুন্না, আব্দুল কাদের, বেলাল, ইমরান, সুমন।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জানান, উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মুন্না ও বেলাল নামে দুই জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।