নগদ সংকটে পড়া ৫ ইসলামী ব্যাংক তারল্য সহায়তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ওই ৫ ব্যাংক হলো— ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
এই ৫ ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডই চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবস্থাপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন।
গতকাল সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ইসলামিক ব্যাংক লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটি’র অধীনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধের সময়কাল হবে ১৪ দিন।
এই প্রথম এমন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ঋণ প্রদানের অনিয়মের অভিযোগের ওঠার পর থেকেই গ্রাহকরা শরিয়াহভিত্তিক এই ব্যাংকগুলো থেকে আমানত তুলে নিচ্ছে। এতে ব্যাংকগুলো চাপ ও তারল্য সংকটে পড়েছে।
চলতি বছর ইসলামী ব্যাংক নিয়ম লঙ্ঘন করে ৯ কোম্পানিকে ৭ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশে ১০টি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক রয়েছে এবং চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ব্যাংকিং সেক্টরের আমানতের ২৬ দশমিক ১৯ শতাংশই ওই ব্যাংকগুলোতে হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের আমানত এই বছরের জুন পর্যন্ত ৪ লাখ ১২ হাজার ৩৪১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।
চলতি বছরের জুনের শেষের দিকে পুরো ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের ২৮ দশমিক ৫২ শতাংশ ছিল ইসলামী ব্যাংক থেকে দেওয়া। এই ঋণকে ইসলামী ব্যাংক ‘বিনিয়োগ’ বলে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৮২৯ কোটি টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় ১৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। গত বছরের তুলনায় এ বছরের এপ্রিল-জুনে ঋণ বিতরণও বেড়েছে।
১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও, বেশ কয়েকটি প্রচলিত ব্যাংকও আমানতকারীদের আকৃষ্ট করতে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং পরিষেবা চালু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশে ইসলামী আর্থিক সেবা প্রদানের জন্য ৯টি প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৪৫টি ইসলামী ব্যাংকিং শাখা রয়েছে এবং ১৩টি প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৪৮০টি ইসলামী ব্যাংকিং শাখা রয়েছে।