বরিশাল জেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকারি জিলা স্কুল কেন্দ্রে ভোট শুরু হওয়ার পূর্বেই পৌঁছে যান বরিশাল সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। এসময় তার সাথে ছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়রসহ অন্তত চার-পাঁচজন কাউন্সিলর।
ভোটকেন্দ্রের একটি বুথে প্রবেশের আগে তাকে বাধা দেন বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান। এতে ক্ষিপ্ত হন মেয়র সাদিক।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়র ইউএনওকে উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কি ঢুকছি এখানে? আমি কি ঢুকছি? কেন সিনক্রিয়েট করতেছেন? আপনি কে? আমি কি ঢুকছি? তারপরও আপনি কথা বলতেছেন। আমি কি বাচ্চা শিশু? স্টুপিডের মতো কথা বলেন। যেভাবে ভাবটা করেন তাতে বুঝায় দল বাঁইধা ঢুকতেছি। ভোটার হইছে ১৭৪ জন। তাহলে সমস্যা কোথায় আপনাদের?’
আর এ পুরো বিষয়টি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর নিজস্ব ফেসবুক পেজে লাইভ চলছিল, যা নির্বাচনী বিধিমালা বহির্ভূত। এমনকি তিনি যখন বুথে ভোট প্রদানের জন্য প্রবেশ করেন তখনও তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে লাইভ করছিলেন।
বরিশাল জিলা স্কুল কেন্দ্রে সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সোয়া ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
মেয়রের ফেসবুক পেজে করা লাইভে দেখা যায়, সকাল ৯টার দিকে ভোট দিতে ওই কেন্দ্রে যান সাদিক আব্দুল্লাহ। এসময় তার সঙ্গে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বরিশাল জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসাইন, বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র গাজী নইমুল হোসেন লিটু, রফিকুল ইসলাম খোকন, ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্না ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনিসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
কেন্দ্রের ১ নম্বর ভোট কক্ষে প্রবেশের সময় বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান মেয়রকে ‘দলবেঁধে’ ভোটকক্ষে প্রবেশ না করতে অনুরোধ করেন। এসময় ইউএনও’র সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় মেয়রের।
এসময় কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহম্মেদ মান্না পাশ থেকে বলেন, এখানে সবাই ভোটার, আপনি চেনেন না। আপনে বরিশালে মনে হয় নতুন। এই মান্না সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি ছিলেন। তিনি বেশ কিছুদিন কারগারে ছিলেন।
তখন জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ইউএনওকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, উনি (মেয়র সেরনিয়াবাত) বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উনি (সাইদুর রহমান রিন্টু) উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
এসময় ইউএনও মনিরুজ্জমান বলেন, চেয়ারম্যান মহোদয়, আমি আপনাদের চিনি। আমি এমন কিছু বলিনি।
একপর্যায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র ইউএনওকে বলেন, আমি তো ভেতরে ঢুকিনি। আসার পর থেকে আপনারা বলতেছেন। ফাইজলামি করেন আপনারা। আপনে কানে কথা শোনেননি।
এ বিষয়ে বরিশাল সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, দলগতভাবে ভোটকক্ষে ঢোকার নির্বাচনী কোনো বিধান নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার দায়িত্ব পালন করেছেন। ভোটকক্ষে ফেসবুক লাইভ করার কোনো বিধান নেই।