ভোলার মেঘনা নদীতে অভিযানে গিয়ে ‘ক্ষুব্ধ জেলেদের হামলা’য় নৌ পুলিশের দুই সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার ভোলা সদর উপজেলার মেঘনা নদীর মাঝে জেগে ওঠা ভোলারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ দুটি গুলি ছোড়ে এবং ঘটনাস্থল থেকে ১৮ জেলেকে আটক করে।
মৎস্যজীবী সমিতির এক নেতা বলেন, সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় ও অভাবের কারণে ওই জেলেরা মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। ক্ষোভ থেকে তাঁরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে থাকতে পারেন।
ইলিশের প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে দেশের নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে ৪ অক্টোবর। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা চলবে।
নৌ পুলিশের ওপর হামলা ও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের দায়ে ভোলা সদরে ২৯ জেলেকে আটক করা হয়েছে বলে মৎস্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন ইলিশা নৌ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ডালিম ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. বিল্লাল হোসেন। আহত অপর দুজন নৌ পুলিশের সাহায্যকারী। তাঁদের নাম জানা যায়নি।
ইলিশা নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আখতার হোসেন বলেন, আটক জেলেদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আহত চারজন ভোলা সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরে ইলিশা নৌ থানার পুলিশ ট্রলার নিয়ে ভোলা-মেহেন্দীগঞ্জ সীমান্তবর্তী ভোলারচর (লক্ষ্মীপুরের সীমানায়) এলাকায় অভিযানে যায়। এ সময় দ্রুতগামী কয়েকটি ট্রলার নিয়ে জেলেদের মাছ ধরতে দেখে পুলিশ। হঠাৎ জেলেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটের টুকরা (জালে বাঁধার জন্য নৌকায় রাখা) ছোড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। ইটের আঘাতে পুলিশের দুই সদস্যসহ চারজন আহত হন। একপর্যায়ে পুলিশ ১৮ জেলেকে আটক করে।
আগামীকাল রোববার কোস্টগার্ড ও পুলিশ নিয়ে ওই এলাকায় আবারও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল। তিনি বলেন, পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ১৮ জেলে এবং নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় আরও ১১ জনকে আটক করা হয়। এ নিয়ে ভোলা সদরে ৪১ এবং চরফ্যাশনে ৩৯ জেলেকে আটক করা হয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি এরশাদ আলী বলেন, বেশির ভাগ জেলে সরকারের নিষেধাজ্ঞা মানছেন। তবে কোনো কোনো জেলে সমিতির কিস্তি, দোকানের বাকি ও মহাজনের দাদনের টাকা দেওয়ার জন্য গোপনে মাছ ধরতে নামতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রজনন মৌসুমের শুরুতে সরকারের ২৫ কেজি চাল দেওয়ার কথা, যা এখন পর্যন্ত জেলেদের হাতে পৌঁছায়নি। এ কারণে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের সংসার চালানোর মতো চাল ও নগদ টাকা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।