বিয়ের আগেই কনে বাড়ি থেকে যৌতুকের গরু আনতে গিয়ে বরের বাবা আটক এলাকাবাসির কাছে। এমন ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের ঘোড়ামারা এলাকায়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৩ অক্টোবর ওই এলাকার দিনমজুর আসিদুল ইসলামের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের সাথে একই ইউনিয়নের কেয়ার বাজার এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে শাহ আলমের বিয়ে রেজিষ্ট্রি হয়। ৬ অক্টোবর বিয়ে বিদায় অনুষ্ঠানের দিন ধার্য্য করা হয়। ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক ঠিক করা হয় ঘটক ছয়ফাল হোসেনের মাধ্যমে। এর মধ্যে অগ্রিম ৬০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিয়েছেন কনে পক্ষ। বাকি টাকা না পাওয়ায় বরের বাবা নাজিম উদ্দিন কনে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে সাত সকালে তাদের একমাত্র সম্বল দুধের গাভী ও বাছুর নিতে আসেন।
বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি কনে পক্ষের লোকজন ও এলাকাবাসি। তাই তাকে আটক করেন তারা। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ৩ জন ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে ওইদিন পুনরায় দুধের গাভী ও বকনার মূল্য ১ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করে গরু দুটি বরের বাবার হাতে তুলে দেন। তবেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার অনুমতি দেন যৌতুক লোভী ওই নাজিম উদ্দিন। ঘটক ছয়ফাল হোসেন জানায়, ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা (যৌতুক) ঠিক হয়েছে।
বিয়ে রেজিস্ট্রির সময় ৬০ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছে এবং কালেমা পড়ার সময় বকনাসহ একটি গাভি ও ৫০ হাজার টাকা নগদ বুঝিয়ে দিবে।
এদিকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির মধ্যে আব্দুল কাইয়ুম ও আহিনুর রহমানসহ অনেকেই বলেন, কষ্ট হলেও মেয়ের সুখের জন্য তার বাবা মা এমনিতেই এসব দিতো। কিন্তু এ যৌতুক লোভী বরের বাবা নাজিম উদ্দিন মেয়ে বিদায়ের আগে যৌতুকের জন্য নিজেই সাত সকালে কনে বাড়িতে গরু নিতে আসাটা আমরা কেউ মেনে নিতে পারিনি। বিয়ের সময় মেয়ে পক্ষের কাছ থেকে ছেলে পক্ষের আর্থিক বা অন্য কোনও সুবিধা নেয়াকেই সাধারণত যৌতুক বলা হয়ে থাকে।
এ যৌতুক এক ধরনের সামাজিক ব্যাধি। যৌতুক গ্রহণ দেশের আইন এবং ইসলামে নিষিদ্ধ হলেও প্রত্যন্ত এই গ্রামাঞ্চলগুলোতে এখনও এই প্রথাটা প্রচলিত রয়েছে। এরই উদাহরণ উপজেলার ঘোড়ামাড়ায় দেখা গেছে।