দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের বিধান দেখিয়ে বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘মনে হয় না তিনি নির্বাচন করতে পারবেন!’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজদের প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর একথা বলেন আইনমন্ত্রী।
‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না’- দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত। আমার মনে হয়, বিএনপির মহাসচিব অনেক আইনই মানেন না।
তাদের পক্ষে এই রকম কথা বলাটা যে খুব একটা সারপ্রাইজিং তা না। আমার কথা হচ্ছে, দেশে যে আইন আছে সে আইনে যদি তিনি (খালেদা জিয়া) যোগ্য হন তাহলে নির্বাচন করবেন। আর অযোগ্য হলে নির্বাচন করতে পারবেন না। ’
এরপরই আইনমন্ত্রী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা-অযোগ্যতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ উদ্বৃত করে বলেন, ‘আইন যা বলে তাই হবে। তবে আইনে যা আছে, তাতে মনে হয় না তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। ’
সংবিধানের ৬৬(ঘ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারী অপরাধে কোনো ব্যক্তির কমপক্ষে দুই বছর সাজা হলে, সেই সাজা খাটার পর পাঁচ বছরের মধ্যে সে ব্যক্তি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরে আপিলের রায়ে হাইকোর্ট সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল এখন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন।
দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে ২৫ মার্চ সাজা স্থগিত করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দেশে চিকিৎসা নেওয়ার শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়। ৭৭ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ দফা খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।