বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও রুপিতে বাণিজ্য করতে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের বৃহত্তম ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। ভারতীয় রপ্তানিকারকদের বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিমূল্য ডলার বা অন্যান্য প্রধান বিদেশি মুদ্রায় নিষ্পত্তি না করারও নির্দেশ দিয়েছে এ ব্যাংক।
ভারতের রাষ্ট্র খাতের এই ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় থেকে সব শাখায় পাঠানো এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আমদানি খরচ বাড়ায় এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে রিজার্ভ সংকট তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে টাকা ও রুপিতে লেনদেন করলে ঝুঁকি কম হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আনুমানিক ৫০০ মিলিয়ন ডলারের এক্সপোজার রয়েছে। এটিকে আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির চলমান পরিস্থিতিতে এটি কমানো হবে।
বাংলাদেশের রিজার্ভ চাপে থাকার সময়ে লেনদেনে ঝুঁকি কমাতে সতর্ক এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এসবিআই এর অভ্যন্তরীণ নথি ও একটি সূত্রের বরাতে একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনটি সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় চড়া মূল্যস্ফীতির শিকার হয়েছে বাংলাদেশ। বেড়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চলতি হিসাবের ঘাটতি। বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদে দেখা গেছে নাটকীয় হ্রাস। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতো বৈশ্বিক দাতাদের কাছে ঋণ চাইছে সরকার।
এই পরিস্থিতিতে গত ২৪ আগস্ট এসবিআই এর প্রধান কার্যালয় থেকে এই নির্দেশনা সংক্রান্ত চিঠি (সার্কুলার) শাখাগুলোতে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ‘আমদানি খরচ বাড়ায় এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে প্রতিবেশী দেশটি বৈদেশিক মুদ্রার চরম সংকটে পড়েছে।’
চিঠিটি দেখে নিশ্চিত হয়েছে রয়টার্স। এর আগে চিঠির বিষয়টি গণমাধ্যমে আসেনি। তবে এ বিষয়ে রয়টার্স জানতে চাইলে, তাতে সাড়া দেয়নি এসবিআই।
ব্যাংকটির সার্কুলারে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ডলার ও অন্যান্য প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা সংক্রান্ত ঝুঁকি কম রাখার জন্যই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে, যা দেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বৈদেশিক মুদ্রা ঘাটতি থেকে উদ্ভূত।
‘তবে ভারতীয় রুপি ও টাকায় লেনদেন করা যাবে’ বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, গত শুক্রবার নাগাদ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে, এক বছর আগে যা ছিল ৪৮ বিলিয়ন। বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।